🏷️ বরিশাল

বরিশালে নানা আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন

📍 : বরিশাল প্রতিনিধি

| 📅 16 December, 2025, 4:18 pm

0Shares

শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক ও বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বরিশালে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলা পুলিশ লাইনস মাঠে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। একই সময়ে সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল সাড়ে ৬টা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকাল সোয়া ৭টা থেকে নগরের ৩০ গোডাউন এলাকার বধ্যভূমিতেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এ সময় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সুমনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ।

শ্রদ্ধা জানাতে আসা ব্যক্তিরা বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। দেশের অধিকাংশ মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। যে চেতনায় দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই বাহাত্তরের সংবিধানের আলোকেই এগিয়ে যেতে হবে।

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় শহিদ এডিসি কাজী আজিজুল ইসলামের কবর জিয়ারত ও দোয়া-মোনাজাত করা হয়।

সকাল ৯টায় নগরের ঐতিহাসিক বেলস পার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান। পরে সকাল ১০টায় চারু, কারু ও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শিল্পপণ্য নিয়ে বিজয়মেলার উদ্বোধন করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা শিশু একাডেমিতে রচনা, আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সিনেমা হলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র এবং উন্মুক্ত স্থানে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। শিশুদের জন্য প্লানেট পার্ক ও দুর্গাসাগর দিঘি উন্মুক্ত রাখা হয় এবং বিনা টিকিটে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়।

দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।

এছাড়া শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত, জীবিত ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনায় সুবিধাজনক সময়ে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।

বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। এর আগে ১৫ ডিসেম্বর রাত থেকেই সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলো আলোকসজ্জায় আলোকিত করা হয়। একই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক জোটের ব্যানারে শহিদ মিনারে বিজয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে বরিশাল প্রেসক্লাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের সম্মাননা স্মারক প্রদান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।